মহাকাশ
"এই মেয়েটাকে আমার একদম ভাল্লাগে না।ইচ্ছা করে এক লাত্থি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিই।"
মেয়েটা আর কেউ না। অঙ্কণেরই ছোট বোন রিনি। রিনি তার মায়ের কোলে আশ্রয় নিয়েছে যাতে অঙ্কণ তাকে মারতে না পারে। অঙ্কনের মতে রিনির মস্তবড় অপরাধ এই যে, অঙ্কণ যে বল দিয়ে খেলছিলো তা রিনি পাঁচ তলা থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।
.
অঙ্কণ আর রিনি দুজনেই খুব ছোট। অঙ্কনের বয়স পাঁচ রিনির তিন। এর মধ্যেই এরা পাকামির ওস্তাদ হয়ে গেছে। থাকে আমাদের পাশের ফ্লাটে।সোফায় বসে আমার সাথে গল্প করছিলেন ওদের মা রুমানা। হঠাৎ রিমি দৌড়ে এসে মায়ের কোলে বসলো।সে যে কোনো অকাজ সংঘটিত করেছে তা যেন ধরতে পেরেই অঙ্কণের থেকে আড়াল করে নিলেন রিমি কে।
অঙ্কণ চেচামেচি করতে লাগলো। আমি ওকে কাছে টেনে নিলাম।
:তুমি ওকে লাত্থি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিতে চাও।
অঙ্কণ রেগে বললো,"হ্যাঁ"
:তুমি কি জানো,তুমি ওকে লাত্থি দিয়ে পৃথিবী থেকে বের করে দিতে পারো!!
এবার অঙ্কণের চোখে বিস্ময়, "কিভাবে?"
:তুমি 11.2Km/s এ বেগে তাকে উপরের দিকে ছুড়ে মারো সে আর কখ্যনো পৃথিবীতে ফিরে আসবে না।
অঙ্কণ কেমন যেন চুও হয়ে গেলো। আর একটা কথাও বললো না৷ মনে মনে কিছু একটা আওড়াচ্ছে বোঝা গেলো শুধু।
রুমানা বাসায় যাওয়ার দেড় ঘন্টা পর কল দিলো; তার কাতর কণ্ঠ, "আনিকা,তুমি অঙ্কণকে কি বলেছ?"
:কেন? কি হয়েছে?
:বাসায় আসার পর থেকে ছেলেটা লাথি মেরে এটা সেটা ভেঙেই যাচ্ছে।সে নাকি প্রেক্টিস করছে, বোনকে লাত্থি দিয়ে মহাকাশে পাঠানোর। যাতে আর কখনো ফিরতে না পারে। আর তার বাবাকে বলছে,সে,কিভাবে বুঝবে সে 11.2km/s বেগে লাথি মারতে পারে।এইটা পরিমাপ সে কিভাবে করবে! এর যন্ত্র কি! ওর কি হবে আনিকা?
বলেই তিনি ফোনটা কেটে দিলেন। কি অদ্ভুত। জানতে না চাইলে প্রশ্ন করলেনই বা কেন? একজন ভাই তার বোনকে মহাশূন্যে পাঠানোর প্রয়াস করছে। এতে দোষ কোথায়।
No comments