~মিষ্টি
আজ রাতেই করতে হবে যা করার। কিন্তু সারাদিন এমন ভাব করতে হবে যেন সব স্বাভাবিক। কোনো ভাবেই যেন কিচ্ছুটি কেউ টের না পায়। কেউ বুঝতে পারলেই কেল্লা ফতে।
কখন কিভাবে কি করবো সব প্লান করা!
রাতের বেলা খেয়েই শুয়ে পড়লাম!
জানি, আরো একবার এসে দেখে যাবে ঘুমিয়েছি কি না।
চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি। আপ্রাণ চেষ্টা যেন বুঝতেও না পারে যে ঘুমাইনি।
রাত ২:৪৫।
সম্ভবত সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে।
সব চুপচাপ। নিস্তব্ধ।
এখন কেউ জেগে থাকার নয়।
শোয়া থেকে উঠে বসলাম। লাইট ভুলেও জ্বালানো চলবে না। বাইরের ল্যাম্পপোস্টের আলো থেকে অল্প অল্প আলো আসছে ঘরে। তাতেই আবছায়া দেখা যাচ্ছে ঘরের সবকিছু।
ধীরে ধীরে পা টিপে টিপে সামনে এগুতে লাগলাম।
একদম শব্দ করা চলবে না। কেউ জেগে গেলাই মিশন ফেইল।
বেডরুম পেরিয়ে, ডাইনিং টেবিলটাকে কোনো মতে পাশ কাটালাম।
দরজা খোলার সাথে সাথে জ্বলে উঠলো আলো। সেই সাথে আমার প্লানের সাক্সেস উদযাপন।
কিন্তু এ কি!! মিষ্টি কোথায়!!
ফ্রিজভর্তি সব তরকারি আর ফল।
আজ যে নেহালের বন্ধুরা সন্দেশ মিষ্টি নিয়ে এলো সেগুলো!! কোথায় সব!
কিছুই নেই।
বরং একটা কাগজ দেখলাম।
কাগজটা নিলাম। সুন্দরভাবে লেখা,
"মা,
আমি জানি আপনার মিষ্টি খুব পছন্দ। তাই লুকিয়ে রেখেছি। ডায়বেটিসটা কন্ট্রোলে না রাখলে তো আপনারই কষ্ট হবে তাই না!"
অজান্তেই ঠোঁটের কোনে হাসি চলে এলো। মেয়েটা আর কতদিন বাঁচিয়ে রাখতে চায় আমাকে।
খুব লজ্জা লাগছে।
যতো বুড়ো হচ্ছি, যেন শিশু হচ্ছি।
.
.
.
No comments